Monday, May 22, 2017

Encountering Bizarre Food




এন্ড্রু জিমার্ন আর বেয়ার গ্রিল্স এর আমি চড়ম ভক্ত। লোকদুটা কি সুন্দর আবজাব সব খেতে পারে- কাঁচাকুচা কেঁচো, শুয়োপোকা থেকে শুরু করে কাঁচা মাংস, নারিভুড়ি- কোন কিছুই বাদ রাখেনা! খাবারের ব্যপারে যদিও আমি চড়ম খুঁতখুঁতে কিন্তু ইস্ট এশিয়ায় থেকে, সেটা অনেক কমে গেছে। যে আমি একসময় মাছও খেতামনা, সে আমি গাপুসগুপুস করে শামুক, ওয়েস্টার, স্কুইড আর অক্টোপাস খাই। ড্রাগন ফ্লাইয়ের লার্ভা খাওয়া ছিল সবথেকে আজব আমার জন্য। মাঝে মাঝে নিজের এই বিবর্তন নিয়ে ভাবি আর ডারউইনের কথাও চিন্তা করি। 

চার্লস ডারউইন নাকি যে প্রজাতি নিয়েই গবেষণা করত, সেটাই খেয়ে দেখত-সেই রকমের খাদক ছিল বলতেই হয়! ক্যামব্রিজের ছাত্র থাকা অবস্থায় নাকি "দি গ্লাটন ক্লাব" নামে একটা সংগঠন করেছিল যাদের মূল কাজ ছিল "এক্সটিক স্পিসিজ" বা বহিরাগত প্রজাতির প্রাণীকে খাদ্য হিসেবে কেমন তার স্বাদ গ্রহণ করে দেখা (অর্থাৎ ইংল্যান্ডের মাটিতে যা যা প্রজাতি পাওয়া যায়)। এজন্য নাকি তারা বাজ পাখি, প্যাঁচা, ইঁদুর, পোকামাকড় ইত্যাদি ইত্যাদি টেস্ট করে দেখেছিল।প্যাঁচা খেয়ে ছেলেরা বলেছিল "ইন্ডেসক্রাইবেবল" যা ভাষায় বর্ণনা করা যায় না (সোজা বাংলায় জঘন্য)। "দি বিগল" যখন গালাপোগাসে গেল, চার্লস ডারউইন সেখানে মনের সুখে ইগুয়ানা খেল। আরমাডিলো (যাকে বাংলায় বলে বন রুই) খেয়ে নাকি বলেছিলেন এটা নাকি হাঁসের মাংসে মত  স্বাদ! এখন বুঝতে পেরেছি কেন চাইনিজগুলা এই আরমাডিলো খেয়ে খেয়ে আরমাডিলোর বংশ নিরবংশ করে "এন্ডেনজার্ড স্পিসিজ" বা বিপন্ন প্রজাতির তালিকায় নিয়ে এসেছে। কিংবা মাদাগাস্কারের "জায়ান্ট টরটয়েজ" বা দৈত্যাকৃতির কচ্ছপও  বিপন্ন তালিকায়। ওইযে ডারউইন থেকে ইন্সপিরেশন পেয়েছে।

সেবার ল্যাব এর নতুন স্টাফ ওয়াং শানশান সেলারি পাওয়া উপলক্ষে পার্টি দিযেছে, এবং গত কয়েকদিনের ট্রেন্ড অনুযায়ি সেটা "গার্ল্স পাটি" তে পরিনণত হল। আমি যেহেতু ইস্ট এশিয়ায় এসে মৎস্য-খোর হয়ে গেছি, ওরা পার্টিতে আমার জন্য মাছ রাখে। এবারও তাই এমন একটা রেস্তোরাতে গেলাম যেটার স্পেশাল আকর্ষণ হল মাছ। মাছ এল, নুডুল্স এল, তফু এল, গরুর মাংসের কাটা স্লাইস এল, হাসের মাংসের গলা কাটা এল (ডাক নেক - কি অদ্ভুত!)। আমরা টেবিলের ইন্ডাকশন কুকারে রান্না করতে লাগলাম। তেল ঢেলে ফ্রাই করা হল তফু, বীফ স্লাইস। প্লেটে করে এল কাটা তরমুজ, গ্লাসে এল ফ্রেশ কমলা, তরমুজ আর বাদামের জুস। কে জানত আরো একটা ডিশ আছে। এত্ত সুন্দর চেহারার ডিশটায়, খুব ছোট ছোট মাংসের মত কাটা, তাতে ক্যাপ্সিকামের লাল, সবুজ মিশ্রণ, স্প্রিং অনিয়ন ছড়ানো, আর লাল মরিচের টুকরো কাটা। লোভনিয়, দেখেই খেতে ইচ্ছে করে। প্রথমে ভেবেছিলাম কবুতরের মাংস এভাবে রান্না করেছে। 
তবু নিশ্চিত হয়ার জন্য জিগেস করলাম
What is this dish?
Its frog!
Frog? Zhen de ma? (মানে সত্যি?)
কানের মধ্যে যেন ঠাডা ফেলল ওয়াং শান শান। 
“Are you afraid of frog?”
No no I’m not afraid of frogs. Err I-I just don’t eat them!
Oww! They are like fish you know!
They are like fish! Are you kidding me? ব্যাঙ আর মাছ এক হইল! ইক্ক্ক্!






এক ইন্ডিয়ান ভেজিটারিয়ান ছিলেন, ড. রাজ -ইস্ট এশিয়াতে এসে উনার মাছ-মাংস খাওয়াতে হাতে খড়ি হয়েছে (বা মুখে রুচেছে)। একবার উনার সাথে গিয়েছিলাম পিৎজা খেতে। সাইড ডিশ হিসেবে উনি বল্লেন,"ইল ফ্রাই" এর অর্ডার দেই কি বল? 

ইলকে বাংলায় বলে "কুইচ্চা বা কুচে" ধানক্ষেতের কাঁদামাটি আর খাল বিলের পললে এটা লুকিয়ে থাকে যাকে ইংরেজিতে বলে "সেডিমেন্ট ডুয়েলিং"। মাছের বাজারে এটা বিক্রি হতে দেখেছি। অতিশয় কদাকার দেখতে, কেম যেন সাপের মত কুতকুতে চোখে চেয়ে আছে। শুনেছি বাংলাদেশ থেকেও নাকি বেশুমার কুইচ্চা থাইল্যান্ড, চায়নার মত ইস্ট এশিয়ার দেশগুলোতে রপ্তানি হয়।
ইট লুক্স সো আগলি! I can't imagine eating "কুইচ্চা"!! 
“এটাতো মাছই! তুমিতো মাছ খাও অনেক,” মন্তব্য ড. রাজের। 
চিংড়ি ফ্রাইয়ের অর্ডার করি কি বল?
No problem. I like shrimp as well!
বিশাল একটা হাসি দিলাম। এন্ড্রু জিমার্ন আর বেয়ার গ্রিল্স এর যতই চড়ম ভক্ত হই না কেন, ব্যাঙ আর কুইচ্চা খেতে পারবনা!



No comments: