Monday, March 6, 2017

Loving Mr. Darrcy


এই সুমা! এই ঘুমাচ্ছিস? আর কত ঘুমাবি? এই লাইনটা শোন...
উম্মম...লেপের তলা থেকে আওয়াজ এল।
আর কত ঘুমাবি? ফিল্ড করে এসে গত দুদিন খালি ঘুমাচ্ছিস আর ঘুমাচ্ছিস! যা উঠে হাত মুখে পানি লাগিয়ে আয়।  আমি চা বানাচ্ছি। সন্ধ্যা হয়ে এল!
দুধ চা খাবি না লেবু চা?
লেবু চা... উঠে বসতে বসতে বল্ল সুমা। আড়মোড়া ভাঙছে।
ওকা!
আমি ইলেক্ট্রিক কেটলিতে পানি নিয়ে প্লাগ এর সুইচ অন করলাম , সুমা ঢুলতে ঢুলতে রেস্ট রুমের দিকে গেল।
লেবুর টুকরো কেটে, মগে টি ব্যাগ দিয়ে গরম পানি ঢেলে পিরিচ দিয়ে ঢেকে দিতে হবে। তারপর যা অসাধারণ একটা চা হয় না! অবশ্য কেউ চিনি চাইলে তাও  দিতে পারে, আমি চিনি ছাড়াটাই পছন্দ করি। আর পিরিচটা খুলে দিলে লেবুর গন্ধওলা এক রাস ধোয়া যখন নাসিকাতে আক্রমণ করে পৃথিবীর কোন সুঘ্রাণের সাথে তার তুলনা চলে না মুহুর্তে।
সুমা আসার পর ওর মগটা দিলাম, লেপের মধ্যে সটান ঢুকে গেল মগ নিয়ে। ভাল ঠান্ডা পড়েছে।
কোন লাইনের কথা যেন বলছিলি তুই?
হ্যা, শোন এটার কথা বলছিলাম, “You pierce my soul. I’m half agony half hope”!
কোন বই?
পারসুয়েশন বাই জেন অস্টেন।
ক্যাপ্টেন ওয়েন্টওর্থ হচ্ছে নায়ক, সে নায়িকা এনকে চিঠি লিখছে। চিঠির প্রথম লাইন হল এটা “You pierce my soul. I’m half agony half hope”!
কেউ যদি এমন করে বলতো প্রেমে পড়ে যেতাম ঐ পোলার। sure!
তুই পড়বি প্রেমে তবেই হইছে!
সত্যি সত্যি হাহা। ঘুনপোকার মত মাথায় কথাগুলা ঢুকে গেছে, বের হচ্ছে না যে!
এবার কি ওয়েন্টওর্থ এর ক্রাশ খাইছস?
হুম
কয়দিন আগে না মিস্টার ডারসির ক্রাশ খাইছিলি?
ঐটা ক্রাশ নারে, ঐটা প্রেম! প্রাইড এন্ড প্রেজুডিসের মিস্টার ডারসির প্রেমে না পড়ে উপায় আছে! এরোগ্যান্ট, ডিসএগ্রিয়েবল, হ্যান্ডসাম, রিচ, ইয়েট আ গুড ম্যান ইনসাইড...
প্রাইড এন্ড প্রেজুডিস যতবার পড়বি ততবার প্রেম হবে।
হুম সত্যি সত্যি । সেদিন তো স্বপ্নেও দেখলাম। চায়ের মগে চুমুক দিতে দিতে বল্লাম আমি।
তুই স্বপ্নেও দেখলি?
হুম, দেখলাম মিস্টার ডার্সির মত কেউ, হোয়াইট স্কিন। আমি তারে মিস্টার ডার্সি মিস্টার ডার্সি বলে ডাকাডাকি করতেছিলাম। কাজেই বুঝলাম যে এইটা মিস্টার ডার্সি।  ব্যাপক হ্যান্ডসাম, এরোগ্যান্ট লুকিং পোলা।
তারপর? চায়ের মগে চুমুক দিল সুমা
দেখি মিস্টার ডার্সি, আমার চৌদ্দগুষ্ঠি আর আমি নানির বাড়িতে বিরিয়ানি খাইতেছিলাম।
কোন বিরিয়ানি?
হাজিরটা। মেজো মামা অর্ডার দিয়া আসছিল।
তারপর শোন মিস্টার ডার্সি খালি কথায় কথায় আমাকে খেপায় আর সবাই খুব মজা নেয়। আর আমার চড়ম মেজাজ খারাপ হয়।
আমি এমন চেতলাম যে নানুর বাসার পাশে আমার আরেকটা নানুর বাসা আছে, ঐখানে গেলাম। ঐ বাসায় আবার আমার খালা আছে সুমি - একই বয়সী তাই বন্ধুও । তারে বল্লাম, আমি তোমার সাথে থাকব। কেউ যদি আমারে খুঁজে বলবা আমি নাই। 
আমি টিভি দেখছিলাম। এর মধ্যে সুমি গেছে চা বানাতে। দরোজায় টক টক। সুমি বলে দেখতো!
আমি দরোজা খুলে দেখি মিস্টার ডার্সি। তারপর?
সূর্যাস্তের সময় যেমন আকাশটা সোনালি হয়ে যায় ঠিক সেইরকম আলো আশেপাশে। আর মিস্টার ডার্সি আমার দিকে তাকায় আছে, আমিও তাকায় আছি। মুভিতে যেমন ক্যামেরা ঘুরায় নায়ক-নায়িকার তাকায় থাকার মুহুর্তে, ঠিক সেই রকম করে ঘুরছিল আশপাশ। মিস্টার ডার্সি বল্ল “In vain have I struggled. It will not do. My feelings will not be repressed. You must allow me to tell you how ardently I admire and love you.” 
তারপর?

তারপর দরজায় কে জানি টক টক করল, আর আম্মা আমাকে ডেকে বল্ল, “ফজরের ওয়াক্ত চলে যাচ্ছে। নামাজ পড়বি না?” আমারো ঘুমটা ভেঙে গেল, আর আমি দেখি সিলিঙের দিকে তাকায় আছি!



No comments: